KATTULI ZAKERUL UL. FAZIL MADRASAH
PAHARTALI,CHITTAGONG. EIIN : 104683
সাম্প্রতিক খবর

মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার ইতিকথা
আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন আসসালাতু ওয়াস্সালামু আলা রাসুলিহিল কারিম আম্মা বা’দ । আমাদের ঐতিহ্যবাহি কাট্টলী জাকেরুল উলুম ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার ইতিবৃত্ত লিখতে হলে সর্বপ্রথম ঐ সমস্ত মহান পুরুষ ও ধর্মানুরাগী ব্যক্তিত্বদের কথা এসে যায় যারা কাট্টলী নামক চট্টগ্রাম শহরের সৌন্দর্য মন্ডিত এলাকা তথা চট্টগ্রাম মহানগরীর রানী হিসেবে খ্যাত সাগর বিধৌত এই মনোরম স্থান বেছে নিয়েছেন একটি দ্বিনী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করার জন্য। এই সকল জান্নাতি পুরুষেরা হলেন সর্ব জনাব মরহুম মফজল আহমদ চৌধুরী, মরহুম আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মরহুম আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম চৌধুরী, মরহুম আলহাজ্ব আনোয়ার চৌধুরী ও মরহুম আলহাজ্ব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। সেই পুর্ণময় তারিখটি ছিল ০১/০১/১৯৭৪ইং।
মরহুম আলহাজ্ব জাকের আলী সওদাগরের রেখে যাওয়া ওয়াক্ফ্ সম্পত্তির উপর মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিধায় সর্বসম্মতিক্রমে মাদ্রাসার নামকরন হয়েছিল জাকেরুল উলুম মাদ্রাসা যার অর্থ দাঁড়ায় জ্ঞান চর্চার গবেষনাগার।
মরহুম আলহাজ্ব আনোয়ার চৌধুরীকে মনোনীত করা হলো প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। হাঁটি হাঁটি পা-পা করে সময় উত্তোরণের সাথে সাথে ০১/০১/১৯৮৪ইং তারিখে দাখিল, ০১/০১/১৯৮৭ইং তারিখে আলিম, ০১/০১/১৯৯০ইং সালে ফাজিল মঞ্জুরী পেয়ে আজকের এ বিশাল ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসা। অবকাঠামোগত অবস্থান বলতে গেলে তিন তিনটি বহুতল ভবন মাদ্রাসার একাডেমীক ও প্রশাসনিক সাইটকে করেছে সুদৃঢ়,সমৃদ্ধ ও সৌন্দর্যমন্ডিত। ১ম শ্রেণী হইতে ফাজিল শ্রেণী পর্যন্ত হাজারের অধিক ছাত্র/ছাত্রীর পদচারণায় মাদ্রাসার আঙ্গিনা আজ মুখরিত।
একে একে মুরুব্বিরা শান্তির ছায়াতলে ঘুমিয়ে গেলেন রেখে গেলেন নিজেদের সু-সন্তান ধর্মপ্রাণ উত্তরাধিকারিদেরকে। এরাই বর্তমানে হাল ধরলেন যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তান হিসেবে। কেউ হলেন সভাপতি, কেউ হলেন সহ-সভাপতি ও কেউবা সদস্য। প্রতিটি মুহুর্ত কাজ করে যাচ্ছেন মাদ্রাসার উন্নয়নের জন্য।
সভাপতি হলেন আলহাজ্ব এমদাদুল হক চৌধুরী, সহ-সভাপতি হলেন জনাব শহিদুল ইসলাম চৌধুরী। সর্ব জনাব নুরুদ্দিন চৌধুরী,আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম চৌধুরী,আলহাজ্ব আনোয়ারুল হক চৌধুরী,আলহাজ্ব এমদাদুল ইসলাম আব্বাস ও সৈয়দ নুর উদ্দিন আহমদ। তাদের নিয়ে গঠিত হল অনুমোদিত গভর্নিং বডি।
এলাকার লোকদের স্বত:স্ফুর্ত সহযোগিতায়, অন্য এলাকার দাতাদের প্রলম্বিত হাত, সর্বোপরি প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনায় মাদ্রাসা আজ ঈর্ষান্বিত পর্যায়ে পৌঁচেছে।
পাঠদানে নিয়োজিত আছেন দেশ সেরা ও উচ্চ শিক্ষিত শিক্ষক বৃন্দ। তারা আন্তরিকতার সাথে শিক্ষাদান করেন এবং ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নিজেদের মত করে তারা গড়ে তোলেন। তারা শুধু ছাত্রদের জ্ঞানদানে ব্যস্ত নন নিজেদের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধির কাজে ও সচেষ্ট। কেউ এম.ফিল করছেন আবার কেউ পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
মাদ্রাসার প্রধান হিসেবে যিনি রয়েছেন তাঁর আছে একাধিক বিষয়ে কামিল ডিগ্রী ও দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ও এম এ ডিগ্রী।
প্রতিবৎসর মাদ্রাসার আভ্যন্তরীণ ও বোর্ড পরীক্ষার ফলাফল খুবই সন্তোষজনক ও আশাব্যাঞ্জক জিপিএ-৫ সহ এই মাদ্রাসার গড়ে পরীক্ষার পাশের হার  ৯৮ভাগ। ২০০৭ সালে থানা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রথমও হয়েছিল এ প্রতিষ্ঠানটি।
মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নিজস্ব ড্রেস আছে। ক্লাস শুরু হওয়ার আগে এসেম্বলি,জাতীয় সঙ্গীত এবং সূচনায় কোরআন তিলাওয়াত হয়। প্রতি বৎসর বার্ষিক খেলাধুলা হয় এবং আকর্ষণীয় পুরষ্কার দেওয়া হয়। বৎসরে দুইবার গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন জাতীয় পর্যায়ে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এ প্রতিষ্ঠানটি অংশগ্রহণ করে।একজন বিপিএড শিক্ষক দক্ষতার সাথে ইহা পরিচালনা করেন। প্রতি বৎসর এই মাদ্রাসার ছাত্ররা মেধার স্বাক্ষর রাখে। তারা থানা পর্যায় পেরিয়ে জিলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে উন্নীত হয়।
মেধা বিকাশে শিক্ষকদের নিরলস প্রচেষ্টা, উন্নয়নের ক্ষেত্রে গভর্নিং বডির আপ্রাণ প্রয়াস ও ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবক-অভিভাবিকাদের আন্তরিকতায় মাদ্রাসাটি ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যাবে। এ প্রত্যাশাই আমরা করছি।
আমরা সকলের দোয়া চাই, চাই সকলের অনাবিল ভালবাসা। আমরা আল্লাহর সাহায্য কামনা করছি প্রতিটিক্ষেত্রে ।                            
                                                                                        আমিন